দুনিয়ায় আল্লাহ্কে খুশি রাখো, পরকালে আল্লাহ্ তোমায় খুশি রাখবেন…।
___ইসলামকে কতোটা মানি!___
আজ মুসলমানেরা আল্লাহ্কে ভুলে যাচ্ছে। শয়তানের ধোঁকায় বারবার নিজেকে সঁপে দিচ্ছে। দুনিয়াবি কাজের দোহাই দিয়ে নামাযে গাফলতি করছে। মুখে বলে আমি আল্লাহ্কে ভালোবাসি, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ভালোবাসি। কিন্তু মন থেকে আল্লাহর বিধান পালন করে না। পঞ্চাশ ওয়াক্তের স্থলে পঞ্চাশ ওয়াক্তের নেকীসহ আল্লাহ্ পাঁচ ওয়াক্ত নামায ফরয করেছেন। কিন্তু আজ আমরা এমন যে, এই পাঁচ ওয়াক্ত নামাযও নিয়মিত আদায় করি না। অনেকে শুধু জুমার নামায আদায় করেই ক্ষান্ত হয়ে যায়। আবার অনেকে তাও না।
হানাফী মাযহাবে পরপর তিন জুমা না আদায় করাকে কুফর হিসেবে গণ্য করা হয়েছে, এবং যে এরকমটি করবে তাকে কাফের বলা হয়েছে। অন্যান্য মাযহাবে তো নামায না পড়াকেই কুফর বলা হয়েছে। এছাড়াও আমরা গরীব দুঃখীদের নিকট সাহায্যের হাত বাড়াই না। অথচ হাদীসে দান সদকার বহু ফযীলত বর্ণিত রয়েছে। এই তো রমজানের রোযা এসে গেছে। আর কিছুদিন পরেই রোযা শুরু হবে। আজ ১২ শাবান ১৪৪২ হিজরী। রমজান মাসেই কিছু লোকদের দেখা যাবে দোকানে পর্দা টানিয়ে নিশ্চিন্তে আহার করছে। দ্বীলে আল্লাহর আযাবের কোনোই ভয় নেই, অথচ নিজেকে দাবী করে মুসলমান।
কতেক মুসলমানদের দেখলে মনে হয় তারা বিধর্মী। দাঁড়ি রাখার কথা বলতেই বৃদ্ধ হয়ে দাঁড়ি রাখার কথা বলে। দাঁড়ি হচ্ছে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাহ্, এবং এটাকে আল্লাহ্ তরফ থেকে ওয়াজিব করা হয়েছে। যা পালন না করলে কোনো নিস্তার নেই। আমার বুঝে আসে না লোকেরা কিরূপে সেলুনে গিয়ে ক্লিন সেইভ করে রাসূলের সুন্নাহ্ দাঁড়ি ফেলে দেয়! কেয়ামতের দিন মুসলমানদের ৭৩ টা দল করা হবে। ৭২ টা দল যাবে দোযখে এবং মাত্র ১ টা দল যাবে বেহেশতে। এবার ভেবে দেখুন আমরা সেই ৭২ দলে আছি কিনা। মুসলমান ধীরে ধীরে পথভ্রষ্টতার অতল গহব্বরে হারিয়ে যাচ্ছে। মুক্তি পাবার চেষ্টাও করছে না।
একবার ভেবে দেখুন তো, আমরা কি আল্লাহর বিধান ও তাঁর রাসূলের সুন্নাহ্ সঠিকভাবে পালন করছি নাকি উলটো বিরোধিতায় লিপ্ত আছি। কোনো বড় অনুষ্ঠান হলেই গান বাজনা চালু করে পালন করা হয়। গান বাজনায় যে কি মধু আছে তা আমার বুঝে আসে না। গান বাজনা শোনার কারণ জানতে চাইলে তারা মন ফ্রেশ হয়ে যাবার কথা বলে। মনের মধ্যে কোনো দুঃখ থাকলে তা গানের মাধ্যমেই নাকি দূর হয়। এহেন গাঁজাখুরি কথা কোনো খাঁটি মুসলমান মানতে পারে না।
কেননা, কুরআনের সূরা ইসরার ৬৪ নং আয়াত এবং বিভিন্ন সহীহ্ হাদীস দ্বারা প্রমানিত যে, শয়তানের আওয়াজ শোনা এবং যেসব বস্তু তথা বাদ্যযন্ত্র পাপাচারের দিকে আহ্ববান করে সেগুলো সবই হারাম। "ইগাছাতুল লাহফান" কিতাবে সূরা ইসরার ৬৪ নং আয়াতের বর্ণনায় আল্লামা ইবনুল কায়্যিম রহমাতুল্লাহি আলাইহি এরকমটাই মন্তব্য করেছেন। তাবেয়ী মুজাহিদ রহঃ বলেছেন, শয়তানের আওয়াজ হলো গান এবং বাদ্যযন্ত্র।
গান-গায়িকা এবং এর ব্যবসা ও চর্চাকে হারাম বলে রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, "তোমরা গায়িকা (দাসী) ক্রয়-বিক্রয় কর না এবং গান শিক্ষা দিও না। আর এসবের ব্যবসায় কোনো কল্যাণ নেই। জেনে রেখ, এর প্রাপ্ত মূল্য হারাম।" সূত্রঃ (জামে তিরমিযী হাদিসঃ ১২৮২; ইবনে মাজাহ হাদীসঃ ২১৬৮) এমনকি হযরত আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহার কাছে কোনো মেয়ে পায়ে নুপুর পড়ে তার কাছে আসলে তিনি নুপুর না খোলা পর্যন্ত তার ঘরে প্রবেশ করাতেন না। এমনটাই সুনানে নাসাঈ হাদীসঃ ৫২৩৭ এবং আবু দাউদ শরীফ ৪২৩১ এ বর্ণিত আছে। এবার ভাবুন! গান ও বাদ্যযন্ত্রের বিরুদ্ধে কতো কঠোর ছিলেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং সাহাবীগণ।
অতএব, আমরা এখনো জিন্দা আছি। মহান আল্লাহ্ তওবার দরজা খুলে রেখেছেন। আসুন আমরা তওবা করে জীবনটাকে আবার নতুন করে সাজাই। আল্লাহ্ আমাদের সকলকে সঠিক বুঝ দান করুন, এবং আমাদের সকলের ভালো আমলগুলো ক্ববুল করুন। আ~মীন।
![]() |
ইসলামকে কতোটা মানি! |
কোন মন্তব্য নেই